ধানমন্ডি লেকের পাশে ডিঙ্গিতে বসে একটু হালকা খাবার উপভোগ করছিলাম. পরিবেশটা ছিল অত্যন্ত আকর্ষনীয়. আমি বিদেশ থেকে বেড়াতে এলাম. তাই দেশী ছোট খাটো জিনিষগুলো আমাকে টানে. লেকের উপর মৃদু বৃষ্টির ফোটা আর হালকা স্নিগ্ধ বাতাসের অল্প অল্প ঢেউএর দোলা মনোযোগ দিয়ে দেখছি. এমন সময় হঠাত লক্ষ্য করলাম একটি মেয়ে শিশু আমার হাতের আইস্ক্রেমের দিকে তাকিয়ে আছে. মেয়েটির বয়স হয়ত সাত কি আট হবে বলে মনে হলো. ওর মলিন মুখ আর জীর্ণ পোশাকের ভাজে মায়াভরা চোখদুটি আমাকে কিছুক্ষন ধরেই লক্ষ্য করছিল. আসে পাশে অন্য কাউকে দেখলাম না. একা তো আর এলো না সে! আমি কৌতুহলী হয়ে ওকে কাছে ডাকলাম. ও একটু লজ্জা পেল মনে হলো. তবুও এগিয়ে এলো. আমি জিগ্যেস করলাম, "তোমার নাম কি? আমাকে দেখছ কেন?" মৃদু স্বরে ও বলল ওর নাম মাধুরী. নাম বলে চুপ করে রইলো. আমি বললাম, "তোমার নাম তো খুব সুন্দর! তুমিও খুব মিষ্টি." ও একটু হেসে দিল. আমি আবার ওকে আমার দিকে চেয়ে থাকার কারণ জিগ্যেস করলাম. তখন ওর উত্তর শুনে আমি স্থির হয়ে গেলাম. আমার মনটা কেমন যেন জোর পদার্থের মত চিন্তা, ভাষা হারিয়ে ফেলল. মাধুরী ছিল ক্ষুদার্থ. ডিঙ্গি স্নাক শপের পাশে বসে ছিল একটা আশায়. কখন কেউ যদি খাবার শেষ না করে উঠে যায়, সেই উচ্ছিষ্ট খাবার দিয়ে পেটের ক্ষুদার কিছুটা সান্তনা যোগাবে. আমার দিকে তাকিয়ে থাকার বিশেষ কারণ ছিল আমি যদি আইস্ক্রিমটা শেষ না করে ফেলে দেই, তখন ও টা তুলে নেবে! ওর এই নিরব অপেক্ষার কথা ভেবে আমার মন তখন সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠলো. নিজেকে অসহায় মনে হলো. কিছুই করা ছিল না. ওকে একটা আইসক্রিম আর একটা বার্গার কিনে দিলাম. ও দ্রুত খেয়ে ফেলল. মনে হলো অনেক দিন পর বুঝি পেট ভরে খেয়েছে. তৃপ্তির একটু হাসি ফুটল ওর মুখে. তারপর জীবনের নিয়মে ওকে ওর অনিশ্চিত দুর্ভাগ্যপূর্ণ ভবিশ্সতের কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে এলাম. বৃষ্টির ফোটাগুলো আরো বড় করে পড়তে শুরু করলো. মনে হয় আমার চোখের দুফোটা অশ্রু সেই জলে বুঝি মিশে একাকার হয়ে গেল. শূন্য মনে একটা রিক্সায় চেপে বসলাম. মাধুরীর মলিন মুখ আমার দৃষ্টির সীমানায় রয়ে গেল আরো অনেকটা সময়.
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
M.A.HALIM
লক্ষ লক্ষ মাধুরী এ সমাজের আনাছে কানাছে ধূঁকে ধূঁকে মরছে। আপনার ক্ষণিকের ভালোবাসা ঐ মাধুরীর উদরটাকে হয়ত কিছুটা লাগব করেছে কিন্তু ভবিষ্যতের.................................। তবু খুব ভালো লাগলো আপনার কোমল মনের ভালোবাসার পরশ মাধুরীকে স্পর্শ করেছে।। শুভ কামনা বন্ধুর জন্য।
প্রজাপতি মন
ওর এই নিরব অপেক্ষার কথা ভেবে আমার মন তখন সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠলো. নিজেকে অসহায় মনে হলো. কিছুই করা ছিল না. ওকে একটা আইসক্রিম আর একটা বার্গার কিনে দিলাম. ও দ্রুত খেয়ে ফেলল. মনে হলো অনেক দিন পর বুঝি পেট ভরে খেয়েছে. তৃপ্তির একটু হাসি ফুটল ওর মুখে. তারপর জীবনের নিয়মে ওকে ওর অনিশ্চিত দুর্ভাগ্যপূর্ণ ভবিশ্সতের কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে এলাম. বৃষ্টির ফোটাগুলো আরো বড় করে পড়তে শুরু করলো. মনে হয় আমার চোখের দুফোটা অশ্রু সেই জলে বুঝি মিশে একাকার হয়ে গেল. শূন্য মনে একটা রিক্সায় চেপে বসলাম. মাধুরীর মলিন মুখ আমার দৃষ্টির সীমানায় রয়ে গেল আরো অনেকটা সময়. আসলে এদের জন্য আমাদের সমাজের বিত্তবানদের অনেক কিছু করার আছে, আমরা মধ্যবিত্তরাও তাদের জন্য কিছু করতে পারি তবে তা ঐ ভাবনা পর্যন্তই কিছু করা আর হয়ে উঠেনা.
সেলিনা ইসলাম
আমাদের পঙ্গু সমাজের পরাজয়ের দৃশ্য সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্ঠা করেছেন । মেয়েটির সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে ওর কঠিন জীবনের অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরলে বেশ সুন্দর আর জীবন্ত একটা গল্প হয়ে যেত । আগামীতে আরও লেখা পড়বার প্রত্যাশায় শুভকামনা ।
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি
খুব ভালো লাগলো | অনেক অনেক ধন্যবাদ | আপনি যেমনি করে ক্ষুধার্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন তেমনি করে আমরা সবাই যেন ওদের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিতে পারি সেই মন মানসিকতা সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে দিন |
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।